ভাইবোনের মধ্যে রেষারেষি মারামারির কাহিনী প্রায় সব একাধিক সন্তানসম্পন্ন পরিবারেরই স্মৃতিতে গাঁথা আছে। সিবলিং রাইভালরির কারণে শুধু ভাইবোনরাই নয়, পরিবারের অন্যান্যরাও সমস্যায় পড়ে।
আর সিবলিং রাইভালরির অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে সন্তানদের প্রতি বাবামায়ের ভালোবাসায় অসাম্য।
অনেক বাবা-মারাই সন্তানদের মধ্যে পার্থক্য করে। কেউ হয়ত ফর্সা মেয়েটাকে আদর করে বেশি, কালো মেয়েটাকে কথা শোনায়।
যে ছেলেটা পড়াশোনায় ভালো তার যত্ন বেশি, সে উপহার পায়ও বেশি। কিন্তু যার মেধা কম, আল্লাহই তাকে কম মেধাবী বানিয়েছেন, তাকে হেয় করা উচিত না।
অনেক পরিবারে দেখা যায় ছেলে সন্তানদের বেশী যত্ন নেয়া হয়। মেয়ে তো বিয়ে করে পরের বাড়ি চলে যাবে। ছেলে সাথে থাকবে সারাজীবন। কিন্তু আসলেই কি তেমনটা হয়?
একজন সন্তানের প্রতি একটু বেশী টান থাকাটা স্বাভাবিক, কিন্তু সেটার প্রকাশ যদি অন্যদের বঞ্চিত করে, তাহলে বরং একটি গুনাহর কাজ।
আমরা হাদিসে পাই যে একজন বাবা তার একজন সন্তানকে উপহার দিয়েছেন অন্যদের বাদ দিয়ে এবং এটা দেখে নবিজি আদেশ দিয়েছেন উপহারটি ফেরত নেয়ার। (ইবনে মাজা ২৩৭৬)
বাবা যতদিন সুস্থসবল আছেন, ততদিন তার সন্মান আছে।
তারপর?
কে দেখাশোনা করবে অসুস্থ লোকটির?
কোন ছেলে বা কোন মেয়ে নিবে এই দায়িত্ব?
“তোকেই তো বাবা বেশী আদর করতো, তুই এখন কর।“
“আমি কেন করতে যাব? সম্পত্তি তো তুইও পাবি।“
কেউ যখন দায়িত্ব নিতে রাজি নয়, প্রিয় সন্তানও নয়, তখন আশ্রয় হয় কোন দয়ালু আত্মীয়ের বাড়ি অথবা কোন বৃদ্ধাশ্রম।
আর বাবা-মার মৃত্যুর পরের দৃশ্য – তাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে গণ্ডগোল। যদি ভাইবোনদের মধ্যে ঐক্য বা মমতাই না থাকে, তাহলে প্রত্যেকের স্বার্থ তো চাড়া দিয়ে উঠবেই। সম্পত্তি নিয়ে কত পরিবার কোর্টে যাচ্ছে, কত দুর্ঘটনা ঘটছে তা হয়তো যেকোনো খবরের কাগজ খুললেই চোখে পড়বে।
আমরা যেন সব সন্তানের সাথে সমানভাবে আচরণ করি। উপহার দিলে একজনকে না, সবাইকেই একই অথবা কাছাকাছি দামের উপহার কিনে দিই।
আমরা যেন আমাদের সন্তানদের একে অপরের প্রতি শত্রু না বানাই।